ম্যাচের ১৩তম মিনিটে হামজা চৌধুরীর ফ্রি-কিকে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু রক্ষণভাগের একের পর ভুলে টানা তিন গোল করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় হংকং চায়না। ৮৪তম মিনিটে মোরছালিনের গোলের পর ইনজুরির কারণে যোগ করা সময়ের ৯ম মিনিটে শমিত সোমের গোলে ৩-৩ গোলে সমতায় ফিরে বাংলাদেশ। কিন্তু ম্যাচের ১০০তম মিনিটে আরও একটা গোল হজমের পর ৪-৩ গোলের পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় বাংলাদেশকে।
১৩ মিনিটে হামজা চৌধুরির জাদুকরী ফ্রি-কিকে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। সেই গোলেই যেন আত্মবিশ্বাস ফিরে পায় পুরো দল। প্রথমার্ধের শেষভাগ পর্যন্ত লিড ধরে রাখলেও ইনজুরি সময়ে কর্নার থেকে গোল হজম করে সমতায় পড়ে হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার দল। বিরতির পর খেলার মোড় ঘুরে যায়—দ্রুত দুই গোল খেয়ে ৩-১ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয়ার্ধে পরিবর্তিত খেলোয়াড় সামিত সোম, শেখ মোরসালিন ও তরুণ জায়ান আহমেদের আগমনে ম্যাচে প্রাণ ফিরে আসে। বাঁ প্রান্তে জায়ানের গতি, মোরছালিনের দৃঢ়তা—সব মিলিয়ে বাংলাদেশ আবারও জেগে ওঠে।
৮৪ মিনিটে মোরছালিনের গোলে পার্থক্য কমে আসে। হংকংয়ের গোলরক্ষক বল ধরতে ব্যর্থ হলে সুযোগ লুফে নেন তরুণ ফরোয়ার্ড। এরপর যোগ করা সময়ের নবম মিনিটে মোরছালিনের নেয়া কর্নার থেকে সামিতের দুর্দান্ত হেডে সমতায় ফেরে বাংলাদেশ। জাতীয় স্টেডিয়ামের গ্যালারি তখন এক উৎসবের মেলায় পরিণত।
কিন্তু আনন্দ স্থায়ী হয়নি এক মিনিটও। সময়ের ঘড়ি যখন ৯০+১০, তখনই বাংলাদেশি রক্ষণের আরেক ভুলে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন হংকংয়ের রাফায়েল মার্কেস। তাঁর গোলে ৪-৩ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করে সফরকারীরা। রেফারির শেষ বাঁশি বাজতেই স্তব্ধ হয়ে যায় স্টেডিয়াম। মাঠে কেউ বসে পড়লেন, কেউ জার্সি দিয়ে মুখ ঢাকলেন—ভেসে গেল এক টুকরো স্বপ্ন।
এই হারের ফলে তিন ম্যাচে এক পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ পড়ে গেছে টেবিলের তলানিতে। অন্যদিকে হংকং সাত পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে, সিঙ্গাপুর পাঁচ ও ভারতের পয়েন্ট দুই। ফলে ৪৫ বছর পর এশিয়া কাপে খেলার আশা এখন প্রায় নিভু নিভু শিখা।
তবুও ম্যাচের শুরুতে হামজার গোল, মোরসালিন-সামিতদের প্রত্যাবর্তন আর শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই—সবই প্রমাণ করেছে, এই দল হার মানতে জানে না। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম খেলায় শেষ বাঁশিতেই যেন তাদের বুক ভেঙে যায়।
