ক্রীড়াঙ্গন থেকে ইসরায়েলকে বহিস্কার করার পক্ষে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী

গাজায় চলমান রক্তক্ষয়ী পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা থেকে বহিষ্কারের দাবি তুলেছেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ। তার মতে, যেমনটি ২০২২ সালে রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে মস্কোকে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, ইসরায়েলের ক্ষেত্রেও একই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

নিজ দলের সোশ্যালিস্ট ওয়ার্কার্স পার্টির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে সানচেজ বলেন, “গাজায় গণহত্যা চলছে, আর এমন সময়ে ইসরায়েল যেন আন্তর্জাতিক ইভেন্টে অংশ নিয়ে নিজেদের ভাবমূর্তি সাদা করতে না পারে।”

স্পেনের ডিজিটাল রূপান্তর মন্ত্রী অস্কার লোপেজ ও সংস্কৃতি মন্ত্রী আর্নেস্ট উর্তাসুনও প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানকে সমর্থন করেছেন। লোপেজ বলেন, গাজায় যা ঘটছে তা ‘গণহত্যা’, আর এর প্রতিবাদে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নামায় তিনি স্বস্তি বোধ করেছেন। উর্তাসুন যোগ করেন, ইসরায়েলকে আগামী ইউরোভিশন গান প্রতিযোগিতা থেকেও বাদ দিতে হবে।

এর আগে আয়ারল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার সংস্থাগুলোও জানিয়েছিল, ইসরায়েলকে ইউরোভিশনে অংশ নিতে দিলে তারা প্রতিযোগিতা বর্জন করবে। তাদের মতে, গাজায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় চলছে।

অন্যদিকে, ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদেওন সা’আর এই মন্তব্যকে ‘লজ্জাজনক’ বলে আখ্যা দেন এবং অভিযোগ করেন যে সানচেজ মাদ্রিদে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ উসকে দিচ্ছেন। এ বিক্ষোভের জের ধরে একটি ইসরায়েলি দল অংশ নিলেও বাতিল হয়ে যায় স্পেনের খ্যাতনামা সাইক্লিং প্রতিযোগিতা ভুয়েল্তা আ এস্পানিয়ার শেষ ধাপ।

গাজায় বেসামরিক মৃত্যুহারে উদ্বেগ প্রকাশের পর থেকেই স্পেন-ইসরায়েল কূটনৈতিক সম্পর্ক নাজুক হয়ে ওঠে। ২০২৪ সালে স্পেন, নরওয়ে ও আয়ারল্যান্ড মিলে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়। সম্প্রতি সানচেজ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যা’র অভিযোগ এনে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞাসহ নানা পদক্ষেপ ঘোষণা করেন। এর জবাবে সা’আর তার প্রশাসনকে ‘ইহুদি-বিরোধী’ আখ্যা দেন এবং ঘৃণামূলক ভাষা ব্যবহারের অভিযোগ তোলেন।

যদিও ইসরায়েল দুর্ভিক্ষের অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং দায় দিয়েছে ত্রাণ সংস্থা ও হামাসকে, জাতিসংঘ-সমর্থিত খাদ্য পর্যবেক্ষক সংস্থা আইপিসি নিশ্চিত করেছে, গাজার কিছু অংশে দুর্ভিক্ষ চলছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, গাজার সব সীমান্ত নিয়ন্ত্রণকারী দখলদার শক্তি হিসেবে বেসামরিক মানুষের জীবন রক্ষার দায়িত্ব ইসরায়েলেরই।

Exit mobile version