টটেনহ্যাম হটস্পারের সঙ্গে এক দশকের সম্পর্ক শেষ করতে চলেছেন ক্লাব অধিনায়ক সন হিউং-মিন। কোনো আগাম গুঞ্জন কিংবা বড় কোনো আভাস ছাড়াই এল এই ঘোষণাটি। চুক্তির মেয়াদ এখনো শেষ হয়নি, ক্লাব ইতোমধ্যে নতুন মৌসুমের প্রস্তুতিও শুরু করেছে। ঠিক এই সময়েই চমকে দেওয়া খবর-বিদায় নিচ্ছেন দক্ষিণ কোরিয়ার তারকা ফরোয়ার্ড।
সন নিজের পরবর্তী গন্তব্য এখনো প্রকাশ না করলেও, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে তিনি হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকার ক্লাব লস অ্যাঞ্জেলস এফসিতে নাম লেখাতে পারেন। ৩৩ বছর বয়সী এই ফুটবলারের জন্য এটাই হতে পারে নতুন অধ্যায়ের শুরু।
মাত্র আড়াই মাস আগে সনের নেতৃত্বেই ইউরোপা লিগ জিতেছিল টটেনহ্যাম। ১৭ বছরের ট্রফিহীন সময়ের অবসান ঘটে সেই জয়ে, ইউরোপিয়ান শিরোপার স্বাদ তারা পেল ৪১ বছর পর। সেই ঐতিহাসিক ম্যাচের পর সন বলেছিলেন, “আজ আমি পৃথিবীর সবচেয়ে খুশি মানুষ।” অথচ নতুন মৌসুমে সেই মানুষটিকে আর দেখা যাবে না লন্ডনের ক্লাবটির জার্সিতে।
চুক্তির মেয়াদ থাকলেও সিউলে নিউক্যাসল ইউনাইটেডের বিপক্ষে প্রাক-মৌসুম ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে ক্লাব ছাড়ার কথা জানিয়ে দেন তিনি।সেখানে সন বলেন,
“এই গ্রীষ্মেই ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি। এটা আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্তগুলোর একটি। গত ১০ বছর ধরে এই ক্লাবের হয়ে খেলা আমার জন্য ছিল গর্বের বিষয়। প্রতিটি মুহূর্ত আমি নিজের সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।”
“চেষ্টা করেছি মাঠে ও মাঠের বাইরে নিজেকে উজাড় করে দিতে। ইউরোপা লিগ জয়ে আমার মনে হয়েছে, যতটা সম্ভব অর্জন করা ছিল, তা করে ফেলেছি।”
সনের পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু হয় ২০০৮ সালে, হামবুর্গার এসভি-র যুব একাডেমিতে যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে। এরপর মূল দলে সুযোগ, পরে ২০১৩ সালে বায়ার লেভারকুজেনে পাড়ি এবং সেখান থেকে ২০১৫ সালে টটেনহ্যামে যোগ দেন তিনি। একটানা ১০ বছর ধরে উত্তর লন্ডনের ক্লাবটিই ছিল তার ঘর।
বিদায়ের সময় কৃতজ্ঞতা জানাতে ভুল করেননি তিনি।
“এই ক্লাবেই আমি সবচেয়ে বেশি পরিণত হয়েছি, একজন খেলোয়াড় ও মানুষ হিসেবে। তাই কৃতজ্ঞতায় ভরা আমার হৃদয়।”
টটেনহ্যামের হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪৫৪ ম্যাচ খেলেছেন সন, করেছেন ১৭৩টি গোল। ইউরোপা লিগ ছাড়াও ক্লাবের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ (২০১৮-১৯) ও লিগ কাপের (২০২০-২১) ফাইনাল খেলেছেন, যদিও সেবার রানার্স আপ হতে হয়েছিল। আর ২০২১-২২ মৌসুমে জিতেছেন প্রিমিয়ার লিগ গোল্ডেন বুট।
ক্লাব কোচ টমাস ফ্র্যাঙ্কও দিয়েছেন বিদায়ী তারকাকে সম্মান। তিনি বলেন,
“সত্যিকারের অর্থেই তিনি স্পার্স কিংবদন্তি। ক্লাবও চেয়েছে তাকে যথাযোগ্য সম্মান জানাতে। এমন একজন খেলোয়াড়ের বিদায়ের জন্য নিখুঁত সময় বেছে নেওয়া কঠিন, কিন্তু আমার মনে হয়, মাথা উঁচু করে বিদায় জানানোর এটাই আদর্শ মুহূর্ত।”
