স্বাগতিক লাওস ও পূর্ব তিমুরকে উড়িয়ে বড় স্বপ্ন নিয়ে তৃতীয় ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার মুখোমুখি হয়েছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ম্যাচের শুরুতে গোল করে এগিয়েও যায় আফঈদার দল। কিন্তু এর পরই একের পর এক গোল হজম করে পিটার বাটলারের শিষ্যরা। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি হারতে হয় ৬-১ গোলের ব্যবধানে। এই হারে ২০২৬ সালে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় মূলপর্বে খেলার স্বপ্নটা অনেকটাই ফিকে হয়ে গেলো আফঈদা-সাগরিকাদের।
এ আসরে ৩২ দল আট গ্রুপে বিভক্ত হয়ে খেলছে। প্রতিটি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও সেরা তিন রানার্স-আপ আগামী বছর থাইল্যান্ডে মূল পর্বে অংশ নেবে। আজকের ম্যাচে কোরিয়ার সঙ্গে ড্র করলেই এইচ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হতো বাংলাদেশ। কিন্তু ৫ গোলের ব্যবধানে হারের পর ৬ পয়েন্ট ও ৫ গোল ব্যবধান নিয়ে রানার্স-আপ হয়ে গ্রুপপর্ব শেষ করতে হলো। ফলে এখন অন্য গ্রুপের ফলাফলের ওপর নির্ভর করছে থাইল্যান্ডগামী স্বপ্ন।
দিনের শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। ম্যাচের ১৫ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাকে ফরোয়ার্ড মোসাম্মৎ সাগরিকা ও শান্তি মারডির অসাধারণ পাস বিনিময়ে বল বক্সে প্রবেশ করে। বাম দিক থেকে শান্তির বাড়ানো বল কোরিয়ান গোলরক্ষকের হাত ফসকে সামনে চলে আসে এবং ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা শ্রীমতী তৃষ্ণা রাণী টোকা দিয়ে বল জালে পাঠাতে ভুল করেননি। এই গোলে গ্যালারিতে থাকা প্রবাসীরা উল্লাসে ফেটে পড়েন। বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতা হলেও কোরিয়ার জালে বাংলাদেশের গোল ছিল বড় প্রাপ্তি।
তবে লিড স্থায়ী হয়নি বেশি সময়। মাত্র তিন মিনিট পর কোরিয়া এক লং বলে বাংলাদেশের হাই লাইন ডিফেন্স ভেদ করে সমতা ফেরায়। দ্রুতগতির কোরিয়ান ফরোয়ার্ডরা ডিফেন্ডারদের পেছনে ফেলে গোলরক্ষক স্বর্ণা রাণীকে একা পেয়ে গোল করেন। প্রথমার্ধে এরপরও বাংলাদেশ রক্ষণাত্মক স্থিরতা বজায় রাখে। আফিদা খন্দকার ঠান্ডা মাথায় রক্ষণ সামলান, আর গোলরক্ষক স্বর্ণা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সেভ করেন। ইনজুরি সময়ে পোস্ট ছেড়ে এগিয়ে এসে কোরিয়ান ফরোয়ার্ডের শট রুখে দেন স্বর্ণা।
বিরতির পরপরই ম্যাচের চিত্র বদলে যায়। দ্বিতীয়ার্ধের তৃতীয় মিনিটে গোল হজম করে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। এরপরই খেলার নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি কোরিয়ার হাতে চলে যায়। ৬১ মিনিটে অধিনায়ক চো হেং আরেকটি গোল করে ব্যবধান বাড়ান। ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারের হাইলাইন ডিফেন্সের কৌশলকে কোরিয়া ধারাবাহিক আক্রমণে বারবার পরাস্ত করে।
৮৪ মিনিটে বাংলাদেশের ডিফেন্ডারের ফাউলে পেনাল্টি পায় কোরিয়া, যা থেকে গোল করে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৪-১। শেষ দশ মিনিটে আরও দুটি গোল হজম করে বাংলাদেশের মেয়েরা, আর হার নিশ্চিত হয় ৬-১ ব্যবধানে।
প্রথমার্ধে লড়াই করার মানসিকতা দেখালেও, দ্বিতীয়ার্ধে ছন্নছাড়া খেলা এবং কৌশলগত ভুলে ভেঙে পড়ে দল। একসঙ্গে দুই খেলোয়াড় বদল করেও বাটলার ম্যাচের গতি ফেরাতে পারেননি।
এখন সেরা তিন রানার্স-আপের তালিকায় টিকে থাকতে হলে অন্য গ্রুপের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে আফিদাদের। শুরুটা আশাব্যঞ্জক হলেও, শেষটা হয়েছে দুঃস্বপ্নের মতো।
স্কোর কার্ড
বিশ্বকাপ ২০২৩














