৮ ফেব্রুয়ারি কমলাপুরস্থ বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে ম্যাচ কমিশনারের ভুলের খেসারতে যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয় বাংলাদেশ ও ভারতকে। ম্যাচের দিন ভারতীয় দলের হাতে ট্রফি ও মেডেল দেয়া হয়। আর বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল তাদের স্মারক বুঝে পেলো ১৮ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ ম্যাচের ঠিক ১০ দিন পর।
রবিবার বিকেলে, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের মাঠে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী দলের অধিনায়ক আফঈদা খন্দকারের হাতে ট্রফি হস্তান্তর করেন সাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন (সাফ) এর সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক হেলাল। ট্রফির পাশাপাশি উপস্থিত মেয়েদের গলায় চ্যাম্পিয়নশিপের মেডেলও পরিয়ে দেয়া হয়।
২৩ জনের স্কোয়াড হলেও পরীক্ষার একাডেমিক পরীক্ষার কারণে ১০ জন খেলোয়াড় এদিন বাফুফে ভবনে উপস্থিত ছিলেন না। উপস্থিত বাকী ১৩জন ট্রফি ও মেডেল নিয়ে উল্লাস করেন।
শিরোপা ও মেডেল গ্রহণের পর প্রতিক্রিয়া জানান, বাফুফে নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ, অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার, টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় ও সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনজনের একজন মোসাম্মত সাগরিকা, দলের কোচ সাইফুল বারী টিটু ও ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম বাবু।
৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ফাইনালে খেলার ৮ম মিনিটে শিবানী দেবীর গোলে লিড নেয় ভারত। নিশ্চিত পরাজয়ের মুখে থাকা বাংলাদেশ ইনজুরি সময়ের তৃতীয় মিনিটে সাগরিকার গোলে সমতায় ফেরে। বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্ট হওয়ায় অতিরিক্ত সময়ের পরিবর্তে সরাসরি টাইব্রেকের আয়োজন করা হয়। সেখানে উভয় দলই ১১টি করে শট নিয়ে সবগুলোতেই গোল পায়।
প্রথম পাঁচ শটের পর পরের ছয় শট ছিলো সাডেন ডেথ। নিয়ম অনুযায়ী ‘সাডেন ডেথ’ অব্যাহতো রাখার কথা। বাংলাদেশ অধিনায়ক আফঈদা দলের ১২তম টাইব্রেক শটটি নেয়ার জন্য বলও বসিয়েছিলেন। কিন্তু শ্রীলঙ্কান ম্যাচ কমিশনার ডি সিলভা জয়াসুরিয়া ডিলান পুরো লঙ্কাকাণ্ড ঘটিয়ে দেন।
বাইলজে না থাকলেও দু’অধিনায়ককে ডেকে ম্যাচ কমিশনার টসের আয়োজন করেন। যেখানে ভারতকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশ অধিনায়ক আফঈদা বেকে বসেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী, ‘ম্যাচ কমিশনার একক সিদ্ধান্তে টস করেন এবং এই ব্যাপারে তিনি কারও সাথে আলাপও করেননি’
ভুল স্বীকার করে টসের ফল বাতিল করেন ম্যাচ কমিশনার ডি সিলভা জয়াসুরিয়া ডিলান। এর পর ভারতীয় দল প্রতিবাদ জানিয়ে মাঠ ছেড়ে যায়। নিয়ম অনুযায়ী ৩০ মিনিটের মধ্যে মাঠে না ফিরলে বাংলাদেশ দলকে জয়ী ঘোষণা করার কথা। কিন্তু দেড় ঘন্টার বেশি সময় বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ফুটবলাররা মাঠে বসেছিলেন।
ঐদিন মাঠে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন। পরে উভয় দলকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়। উভয় দলের অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়ককে ডেকে এনে ট্রফি তুলে দিয়ে মাঠ ছাড়েন ক্রীড়া মন্ত্রী।
মাঠে আর কোন আনুষ্ঠানিকতা না থাকলেও পরবর্তীতে ভারতীয় দলকে ট্রফি ও মেডেলে বুঝিয়ে দেয়া হয়। সেটা নিয়েই হোটেলে উল্লাস করে ভারতীয় দল। আর বাংলাদেশ দল ট্রফি ও মেডেল হাতে পেলো ফাইনালের ১০ দিন পর।