আজ মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও ভারত।
এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের পঞ্চম রাউন্ডে আজ রাত ৮ টায় ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও ভারত । দুই দলই ইতোমধ্যে প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় নিয়েছে। তবুও বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ কে ঘিরে দেশের ফুটবল অঙ্গনে তৈরি হয়েছে তীব্র উত্তেজনা। প্রতিদ্বন্দ্বিতার নতুন মাত্রা যোগ হওয়ায় লড়াইটি আর নিয়মরক্ষার পর্যায়ে থেমে নেই। দুই দলই মরিয়া নিজেদের সেরা খেলাটা মাঠে নামাতে।
চার ম্যাচ শেষে ‘সি’ গ্রুপে দুই দলেরই পয়েন্ট চার। গোলপার্থক্যে বাংলাদেশ এগিয়ে, আর ভারত রয়েছে তলানিতে। এই ম্যাচ তাই শুধু তিন পয়েন্টের নয়; আত্মবিশ্বাস ফেরানো ও গৌরব পুনরুদ্ধারেরও লড়াই।
বাংলাদেশ ও ভারতের ফুটবলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বিতা দীর্ঘদিনের। অথচ অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, গত ২২ বছর ধরে ভারতকে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। ২০০৩ সালে ঢাকায় সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে সর্বশেষ জয় এসেছিল লাল সবুজের প্রতিনিধিদের। এরপর কেবল ড্র বা হার। আজ শেষ হোম ম্যাচে দুই যুগের সেই খরা কাটাতে মরিয়া বাংলাদেশ দল।
ম্যাচটি দেখতে টিকিটের চাহিদা আকাশছোঁয়া। সারাদেশের সমর্থকদের চোখ আজ রাতে জাতীয় স্টেডিয়ামের দিকে। র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫০ ধাপ এগিয়ে ভারত। যদিও সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে দুই দলের ব্যবধান ততটা নয় বলেই মনে করছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ভারত তাদের সেরা অবস্থায় নেই এবং সেটি কাজে লাগানোর সুযোগ রয়েছে। তাঁর ব্যাখ্যা, ভারতের সুপার লিগ এখনো শুরু হয়নি এবং এটি বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক হতে পারে।
ম্যাচের ফল টুর্নামেন্টের অবস্থায় কোনো পরিবর্তন না আনলেও উত্তাপ কমছে না। দুই দেশের ঐতিহ্য, দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা আর ২২ বছরের জয়খরার চাপ সব মিলিয়ে ম্যাচটি হয়ে উঠেছে উচ্চচাপের একটি মুখোমুখি লড়াই। জামাল ভূঁইয়াও বিষয়টি উপলব্ধি করছেন। তাঁর ভাষায়, এটি কেবল আরেকটি ম্যাচ নয়; আবেগ, চাপ আর সংঘর্ষে ভরা এক মহারণ। তিনি মনে করেন, ম্যাচে প্রচুর ফাউল, ফ্রিকিক, হলুদ কার্ড এমনকি উত্তপ্ত মুহূর্ত দেখা যেতে পারে। তবুও তিনি এটিকে স্বাভাবিক ম্যাচ হিসেবে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। কারণ এই ম্যাচের পর জাতীয় দলের সামনে দীর্ঘ বিরতি, তাই বছরের শেষ ম্যাচটি জয়ে শেষ করতে চান তিনি।
আজকের লড়াইয়ের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু ইংল্যান্ডে জন্ম নেওয়া মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী। ছয় ম্যাচে চার গোল করে তিনি হয়ে উঠেছেন বর্তমান দলের প্রাণভোমরা। তাঁকে নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন ভারতের কোচ খালিদ জামিল। তাঁর মতে, বাংলাদেশকে হালকা ভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই কারণ এটি প্রীতি ম্যাচ নয়; বাছাইপর্বের গুরুত্ব এখানে স্পষ্ট।
বাংলাদেশ দলের স্প্যানিশ কোচ জ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা মনে করেন বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ আবেগ বড় ভূমিকা রাখবে। ডার্বির স্বাদ থাকায় এটি সবার জন্য বিশেষ এবং দলের আবেগ কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সেটাই মূল চ্যালেঞ্জ বলে তিনি মনে করেন।
সবকিছু মিলিয়ে রাত ৮ টায় বল গড়ানোর আগেই আগ্রহ ও উত্তেজনার পারদ চূড়ায়। কোটি ফুটবলপ্রেমী অপেক্ষায়, কখন শুরু হবে আজকের এই বহু প্রতীক্ষিত মহারণ।
স্কোর কার্ড
বিশ্বকাপ ২০২৩




















