বিমানবন্দরে অবৈধ মদ; নিষিদ্ধ পাঁচ ফুটবলার

টালমাটাল দেশের ফুটবলাঙ্গন। ৬৪ বোতল মদকাণ্ডে ক্লাবে নিষিদ্ধ হয়েছেন বসুন্ধরা কিংসের পাঁচ গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। এদের মধ্যে আছেন জাতীয় দলের তিন অপরিহার্য খেলোয়াড় ডিফেন্ডার তপু বর্মন, গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো ও তরুণ স্ট্রাইকার শেখ মোরসালিন আহমেদ। আছেন আরও দুই অভিজ্ঞ দুই ফুটবলার তৌহিদুল আলম সবুজ ও রিমন হোসেন।

ঘটনার ভয়াবহতা এতোই বেশি ছিলো যে ২ সেপ্টেম্বর ভারতীয় ক্লাব ওড়িশা এফসি’র বিপক্ষে এএফসি কাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে ঝুঁকি নিয়েও একাদশের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের নিষিদ্ধ করেছিলো বসুন্ধরা কিংস। বিশেষ করে গোলরক্ষক জিকো ও ডিফেন্ডার তপুকে বসিয়ে রাখার বিষয়টা ছিলো কিংসের জন্য দু:সাহসি সিদ্ধান্ত। কিন্তু শৃঙ্খলার স্বার্থে তারা এমন ঝুঁকি নিয়েছে এবং সাধুবাদ পাচ্ছে সর্বস্তর থেকে।

১৯ সেপ্টেম্বর মালদ্বীপের মাজিয়া স্পোর্টস অ্যান্ড রিক্রিয়েশন ক্লাবের বিপক্ষে ৩-১ গোলে হারে বসুন্ধরা কিংস। এএফসি কাপের ওই ম্যাচের পর দেশে ফেরার সময় ‘ডিউটি ফ্রি’ শপ থেকে বিপুল পরিমাণ মদ কেনেন ওই পাঁচ ফুটবলার। জানা গেছে, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টমস কর্মকর্তারা তাদের কাছে ৬৪ বোতল মদ পেয়েছেন। তবে গুঞ্জন আছে এই সংখ্যাটা প্রায় ১০০ বোতলের কাছাকাছি।

বসুন্ধরা কিংস সভাপতি ইমরুল হাসান জানিয়েছেন, শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়টি ক্লাব কর্তৃপক্ষ গুরুত্বের সাথে নিয়েছেন। এটি শুধু একটি ক্লাব নয় একটি ব্রান্ড। তাতে কালিমা পড়ুক এটা কেউই মেনে নিবে না। ফলে এএফসি কাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগেও খেলোয়াড়দের শাস্তি দিয়েছে। আমা বার্তা দিতে চেয়েছি যে, আগে ভাবমূর্তি তার পর সবকিছু। কিংস সভাপতি আরও বলেন, অনেকে নিশ্চয়ই ভেবেছেন, ম্যাচেরও পরও তো আমরা তাদের বিরুদ্ধে শাস্তি নিতে পারতাম। যদি তাই হতো তখন খেলোয়াড়রা ভাবতো তারা অনেক অপরিহার্য।

তবে, অন্য একটা বিষয়ও সামনে চলে এসেছে। মাত্র পাঁচজন ফুটবলার কেন এতো বড় ঝুঁকি নিতে গেলেন? তারা কি নিজেদের ক্যারিয়ার নিয়ে একটুও ভাবলেন না? মোরসালিনের বয়স কম। সবেমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন। একই অবস্থা জিকোরও। তবে অনেকদিন ধরে কিংসের গোলবার সামলানোর কারণে তার মধ্যে পরিপক্কতা অন্তত মোরসালিনের চেয়ে বেশি। সেই জিকোও কেন এমন কাজ করতে গেলেন? বিশেষকরে তপু বর্মনের কথা না বললেই নয়। শুধু বসুন্ধরা কিংস নয়, বাংলাদেশ জাতীয় দলও তার ওপর চেয়ে থাকে। সুস্থ তপু বর্মনকে বাইরে রেখে কোচরা দল সাজানোর পরিকল্পনা করতেই পারেন না সেই তপু কি মদ আনার আগে একবারও চিন্তা করলেন না? নাকি, সম্মিলিত অপকর্মের দায়ভার শুধু এই পাঁচজনের ওপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। এই প্রশ্নটাও এখন সামনে চলে এসেছে। তবে বসুন্ধরা কিংস যে সাহসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে ভবিষ্যতে এমন কাজ করার আগে একবার হলেও খেলোয়াড়রা তার পরিণতির কথা ভাববেন।

Exit mobile version