ইংলিশ ক্লাব শেফিল্ড ইউনাইটেডের তারকা ফুটবলার হামজা চৌধুরী সপ্তাহে উপার্জন করেন ৫০ হাজার পাউন্ড, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮০ লাখ টাকা। অথচ সেই ফুটবলারই যখন বাংলাদেশের জার্সি গায়ে চাপিয়ে খেলতে আসেন, তখন বাফুফের পক্ষ থেকে দলের অন্য খেলোয়াড়দের মতোই ম্যাচ ফি দেয়া দেয়া হয় মাত্র ২৪ হাজার টাকা।
কিন্তু হামজার জন্য বিষয়টা কখনোই টাকার অঙ্কে সীমাবদ্ধ ছিল না। ফুটবলে তার যাত্রা ইংল্যান্ডের ঘরোয়া লিগ থেকে শুরু হলেও, হৃদয়ের গভীরে সব সময়ই ছিল বাংলাদেশের প্রতি টান। সেই টানেই তিনি লেস্টার সিটি, শেফিল্ড ইউনাইটেডের মতো ক্লাবের আরামদায়ক জীবনকে একপাশে রেখে পা রাখেন ঢাকার মাটিতে।
বাংলাদেশ দলে তার অভিষেকটা ছিলো স্বপ্নের মতো। অনুশীলন, ভারত সফর, আন্তর্জাতিক ম্যাচ সবই ছিল তার জন্য আবেগময় এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। মাঠে নামার সময় ভারতের মাটিতেই স্টেডিয়ামের শেষ সারি থেকে এক কিশোরের চিৎকার, “হামজা ভাই, তুমি তো আমাদের গর্ব!” এটাই তো তার জন্য সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি আর পুরস্কার।
একজন ফুটবলারের প্রকৃত মূল্য কি কেবল তার উপার্জনের অঙ্কেই মাপা যায়? হামজা প্রমাণ করলেন, দেশপ্রেমের মূল্য কখনো টাকার অঙ্কে ধরা যায় না। নিজের পকেটের টাকা খরচ করেও তিনি খেললেন লাল-সবুজের জন্য। এ যেন এক নিখাদ ভালোবাসার গল্প। যেখানে দেশ, মাটি, আর পতাকাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।
হামজা চৌধুরীর এই আত্মনিবেদন নতুন প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। হয়তো একদিন বাংলাদেশের ফুটবলও সেই জায়গায় পৌঁছাবে, যেখানে জাতীয় দলের জন্য খেলতে আর্থিক ত্যাগ স্বীকার করতে হবে না কারও।