ফুটবলের মাস্টারমাইন্ড পেপ গার্দিওলা দাঁড়িয়ে আছেন কোচিং জীবনের এক বিশাল মাইলফলকের সামনে। ম্যানচেস্টার সিটির স্প্যানিশ এই কোচের জন্য আজ (রোববার) হবে ক্যারিয়ারের ১০০০তম ম্যাচ। এমন ঐতিহাসিক রাতে তার দল মুখোমুখি হবে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ঐতিহ্যবাহী প্রতিপক্ষ লিভারপুলের।
রাত সাড়ে ১০টায় ইতিহাদ স্টেডিয়ামে শুরু হবে ম্যাচটি, যা আন্তর্জাতিক বিরতির আগে দুই দলের শেষ লড়াইও। দুই দলেরই সামনে সুযোগ আছে জয় পেলে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে ওঠার।
২০০৭ সালে বার্সেলোনা ‘বি’ দলের কোচ হিসেবে পথচলা শুরু করেছিলেন গার্দিওলা। এরপর বার্সেলোনা, বায়ার্ন মিউনিখ ও ম্যান সিটির হয়ে তিনি এখন পর্যন্ত ৯৯৯ ম্যাচ পরিচালনা করেছেন। যার মধ্যে সিটির হয়ে ৫৪৯, বার্সেলোনায় ২৪৭, বায়ার্নে ১৬১ ও বার্সা ‘বি’-তে ৪২ ম্যাচ। জয় এসেছে ৭১৫ ম্যাচে, হার মাত্র ১২৮টিতে। ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত তিনটি চ্যাম্পিয়নস লিগসহ মোট ৩৯টি ট্রফি জিতেছেন এই ৫৪ বছর বয়সী কোচ।
নিজের এই দীর্ঘ যাত্রা নিয়ে গার্দিওলা বলেছেন,
“আমি কতটা ম্যাচ জিতেছি, তা কখনো হিসাব করি না। তবে যখন এমন মাইলফলক আসে, তখনই বুঝতে পারি আপনি কী করে এসেছেন। বার্সেলোনা, বায়ার্ন কিংবা সিটি সব জায়গাতেই অবিশ্বাস্য সময় কেটেছে। সত্যি বলতে, এই পর্যায়ে আবার নতুন করে শুরু করতে পারব না; অনেক ম্যাচ, অনেক বছর পেরিয়ে এসেছে। আশা করি, রোববারও আমরা জয়ের ধারাটা বজায় রাখতে পারব।”
অন্যদিকে লিভারপুল কোচ আর্নে স্লটের দল এবার কিছুটা চাপে থাকলেও, ঘরের মাঠে রিয়াল মাদ্রিদকে হারানোর পর আত্মবিশ্বাসে ভরপুর। সিটির মাঠে কঠিন চ্যালেঞ্জের অপেক্ষায় আছেন তিনিও।
স্লট বলেন,
“ইতিহাদে খেলা সব সময়ই কঠিন। সম্ভবত মৌসুমের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এটি হবে। তবে প্রতিটি অ্যাওয়ে ম্যাচই আলাদা পরীক্ষা। সিটিও জানে, তারাও দুটি অ্যাওয়ে ম্যাচে হেরেছে। তাই ম্যাচটি দারুণ লড়াইয়ের হবে।”
এদিকে নজর থাকবে সিটির নরওয়েজীয় গোলমেশিন আর্লিং হালান্ডের দিকে। চলতি মৌসুমে ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে ১৭ ম্যাচে ২৭ গোল করেছেন তিনি। প্রিমিয়ার লিগে ১০৭ ম্যাচে তার গোলসংখ্যা ৯৮। আর মাত্র দুটি গোল করলেই তিনি হবেন লিগ ইতিহাসের দ্রুততম সেঞ্চুরিয়ান, যেখানে অ্যালান শিয়েরারের লেগেছিল ১২৪ ম্যাচ। তবে লিভারপুল বরাবরই হালান্ডের জন্য কঠিন প্রতিপক্ষ। তাদের বিপক্ষে ৮ ম্যাচে তার গোল মাত্র ৩টি।
লিভারপুলের পক্ষে নির্ভরতা থাকবে মোহামেদ সালাহর উপর, যিনি সিটির বিপক্ষে দলটির হয়ে সর্বোচ্চ ১৫ গোল-অ্যাসিস্টে (৯ গোল, ৬ অ্যাসিস্ট) যুক্ত। সঙ্গে থাকবেন ফন ডাইক, ম্যাক-অ্যালিস্টার, সোবোজলাই, একিতিকে ও ভির্টজ, যাদের পারফরম্যান্স বদলে দিতে পারে ম্যাচের মোড়।
অন্যদিকে সিটি অনেকটাই নির্ভর করছে হালান্ডকে ঘিরে। তার সঙ্গে আক্রমণভাগে ফিল ফোডেন, টিজনি রেইন্ডার্স, স্যাভিনিও ও জেরেমি ডোকুরা তৈরি করছেন ভারসাম্য।
বর্তমানে ১০ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে ম্যান সিটি (৬ জয়, ১ ড্র, ৩ হার)। সমান ম্যাচে লিভারপুলের পয়েন্ট ১৮ (৬ জয়, ৪ হার), অবস্থান ছয় নম্বরে। টেবিলের শীর্ষে আছে আর্সেনাল ২৬ পয়েন্ট নিয়ে, দ্বিতীয় স্থানে চেলসি ২০ পয়েন্টে। জয় পেলে দুই দলই সুযোগ পাবে শীর্ষ দুইয়ে জায়গা করে নেওয়ার।
ইতিহাস বলছে, সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে লিভারপুল ও ম্যান সিটি ১৯৯ বার মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে অলরেডরা জিতেছে ৯৫ বার, সিটির জয় ৫২। প্রিমিয়ার লিগের হিসাবেও এগিয়ে লিভারপুল। ৫৬ ম্যাচে ২৩ জয় ও ২১ ড্র, সিটির জয় মাত্র ১২টি। তবে সাম্প্রতিক ১২ ম্যাচে গার্দিওলার দল প্রভাব বিস্তার করে জিতেছে ১০টি, বাকি দুটি ম্যাচে একবার করে ড্র ও হার।
স্কোর কার্ড
বিশ্বকাপ ২০২৩

















