২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করেছিল বসুন্ধরা কিংস। মাত্র এক দশকের কিছু বেশি সময়ের মধ্যেই তারা বাংলাদেশের ফুটবলে এক অনন্য শক্তি হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। গত ছয় মৌসুমে পাঁচবার প্রিমিয়ার লিগ জিতে ঘরোয়া ফুটবলে যে দাপট দেখিয়েছে, সেটাই এখন এশিয়ার মঞ্চে ছড়িয়ে দিতে চাইছে ক্লাবটি।
২০১৮ সাল ছিল কিংসের জন্য মোড় ঘোরানো বছর। সেবারই তারা স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজনকে দায়িত্ব দেয় এবং কোস্টারিকার বিশ্বকাপ খেলোয়াড় ড্যানিয়েল কোলিন্ড্রেসকে দলে ভেড়ায়। এই সিদ্ধান্ত বদলে দেয় ক্লাবের গতিপথ। সেই থেকে কিংস নিয়মিত খেলছে এএফসি কাপ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বাছাইপর্ব ও নতুন চালু হওয়া এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে।
এশিয়ার যাত্রা কঠিন হলেও বেশ কিছু স্মরণীয় জয়ও এনে দিয়েছে তারা— যেমন ভারতের মোহন বাগান সুপার জায়ান্টের বিপক্ষে জয় কিংবা সম্প্রতি সিরিয়ার ঐতিহ্যবাহী ক্লাব আল-কারামাহকে হারানো। এই ম্যাচ জয়ের পর অধিনায়ক তপু বর্মণ বলেন, “এটা আমাদের এবং বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য বড় অর্জন। আমরা শুরুতেই গোল করেছি, তারপর দলগতভাবে রক্ষণ সামলেই ৯৩ মিনিট লড়ে গেছি।”
কিংসের শক্তি গড়ে উঠেছে দেশি-বিদেশি প্রতিভার মিশেলে। মিডফিল্ডে কোলিন্ড্রেসের সৃজনশীলতা, ব্রাজিলিয়ান রবসন রবিনহোর গতি, আর্জেন্টাইন হারনান বারকোসদের সঙ্গে লেবাননের মোহাম্মদ জালাল কদুহ- স্কোয়াডকে দিয়েছে আন্তর্জাতিক মান। ইউরোপে খেলা তারিক কাজীর মতো প্রবাসী খেলোয়াড়ও দলকে শক্তিশালী করেছেন।
তবে আসল ভরসা দেশীয় প্রতিভা। অধিনায়ক তপু বর্মণ ও বিশ্বনাথ ঘোষের রক্ষণভাগ, রকিব হোসেনের আক্রমণ, সাদ ও তাজউদ্দিনের বহুমুখিতা— সব মিলিয়ে বসুন্ধরা কিংস আজ দেশের ফুটবলের মানদণ্ড হয়ে উঠেছে।
তপু বর্মণ বললেন, “আমাদের লক্ষ্য এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলা। এটা কঠিন হলেও সঠিক ব্যবস্থাপনা আর শক্তিশালী স্কোয়াড থাকায় আমরা আশাবাদী। আমরা এশিয়ার বড় বড় ক্লাবের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাই।”
ক্লাবের সাফল্যের পেছনে বড় ভূমিকা রয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপের। প্রেসিডেন্ট ইমরুল হাসানের দূরদর্শী পরিকল্পনা, পেশাদার পরিচালনা আর ফুটবলের প্রতি আগ্রহই দলটিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে।
এএফসি কাপের একাধিক আসরে অংশ নেওয়া, তিন মৌসুমে রানার্সআপ হওয়া এবং এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে অগ্রগতি- প্রতিটি অর্জনই প্রমাণ করছে, বসুন্ধরা কিংস শুধু দেশের নয়, মহাদেশীয় ফুটবলেও নিজেদের শক্ত অবস্থান গড়ে তুলছে।
স্কোর কার্ড
বিশ্বকাপ ২০২৩











