যৌন হয়রানির প্রতিবাদে মিরপুরে মানববন্ধন

যৌন হয়রানির প্রতিবাদে মিরপুরে মানববন্ধন

দেশের ক্রীড়াঙ্গনে যৌন হয়রানি বন্ধ ও দায়ীদের বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ চলছেই। এবার মিরপুর শেরে-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের মূল ফটকের সামনে বুধবার দুপুরে ‘সম্মিলিত ক্রীড়াঙ্গন, বাংলাদেশ ক্রিকেটাঙ্গন’ব্যানারে মানববন্ধন করেছেন দেশের বিভিন্ন খেলার সাবেক, বর্তমান ক্রীড়াবিদ ও ক্লাবের ক্রীড়া সংগঠকরা।

দুপুরে মিরপুরে মানববন্ধনে বক্তাদের কথায় ছিল ক্ষোভ ও হতাশা। পাশাপাশি তাদের দাবি অভিযুক্তদের দ্রুত অপসারণ, তদন্তের স্বচ্ছতা এবং শাস্তি নিশ্চিত করা। জাহানারা আলমসহ কয়েকজন নারী ক্রিকেটারের অভিযোগ এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে আটকে আছে বলে অভিযোগ তাদের। তদন্ত বা সমাধানের দৃশ্যমান উদ্যোগ না থাকায় মানববন্ধনে উপস্থিতদের ক্ষোভ ছিল স্পষ্ট।

এসময় হয়রানি ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা জানান শুটার তাসমায়াতি এমা আলি । তার বক্তব্য ছিল, যারা কাজে থাকবেন, তারা যেন নারীদের নিরাপত্তা বুঝতে পারেন, অভিযোগের মুখে থাকা কারও হাতে দল বা খেলোয়াড়দের দায়িত্ব দেওয়া যাবে না।

মানববন্ধনে, ফেডারেশনগুলোতে নারী নেতৃত্বের অংশগ্রহণ বাড়ানো। নারী ক্রিকেট দলের অনূর্ধ্ব-১৯ থেকে সিনিয়র পর্যন্ত কোচ, ম্যানেজার, ফিজিও, ট্রেনার, যেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা, সেখানে নারীদের অন্তর্ভুক্তির কথা জোর দিয়ে বলেন অনেকেই। শুধু মাঠে নয়, ফেডারেশন ও প্রশাসনিক পদেও নারীদের জায়গা নিশ্চিত করার আহ্বান ছিল তাদের কণ্ঠে।

এসময় সাবেক ব্যাডমিন্টন তারকা ও সংগঠক কামরুন নাহার ডানা বলেন, দেশে ৪৬টি ফেডারেশন এবং ৫০টির বেশি অ্যাসোসিয়েশন রয়েছে, যেখানে বিভিন্ন ডিসিপ্লিনে অসংখ্য নারী খেলছেন। এমন বাস্তবতায় এখনো যৌন হয়রানি নিয়ে লুকোচুরি বা সহনশীলতা চলতে পারে না। অভিযোগ তদন্তে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে সেখানে এমন ব্যক্তিকেও রাখা হয়েছে, যিনি নিজেই অসদাচরণের অভিযোগে আলোচনায় ছিলেন এটা নারীদের জন্য অপমানজনক। অভিজ্ঞ ও নিরপেক্ষদের দিয়ে তদন্তে থাকতে হবে।

এছাড়া তিনি বলেন,‘একজন নারী যখন বলে, সে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে সেটাই প্রাথমিক এবং সবচেয়ে বড় প্রমাণ। প্রমাণের নাম করে সময় নষ্ট, দায়সারা তদন্ত, কিংবা অভিযোগকে খাটো করে দেখার জায়গা নেই।’

এসময় ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও ফেডারেশনগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, তদন্ত যেন কোনোভাবেই হেলাফেলা না হয়। কোনো নির্যাতক প্রভাব খাটাতে পারবে না। কেউ দোষী হলে তার শাস্তি কয়েক বছরের নয়, আজীবনের নিষেধাজ্ঞা হওয়া উচিত।

কামরুন নাহার ডানা ছাড়াও, সাবেক শুটার সাবরিনা সুলতানা রত্না, জাতীয় ভলিবল দলের সাবেক তারকা শিরিন আক্তার চৌধুরী, বিভিন্ন ক্লাব ও সংগঠনের প্রতিনিধিসহ উপস্থিত ছিলেন আরও অনেকে। তাদের সবার দাবি ছিল একই-নারীদের নিরাপদ ক্রীড়াঙ্গন গড়ে তোলার দায়িত্ব সময় নিয়ে নয়, এখনই পালন করতে হবে।

Exit mobile version