উইম্বলডনের সবুজ ঘাসে ইতিহাস গড়লেন ইয়ানিক সিনার। সাতবারের চ্যাম্পিয়ন সার্বিয়ার নোভাক জোকোভিচকে সরাসরি সেটে (৬-৩, ৬-৩, ৬-৪ গেমে) হারিয়ে প্রথমবারের মতো উইম্বলডন টেনিসের ফাইনালে উঠলেন ২৩ বছর বয়সী ইতালিয়ান তারকা।
জোকোভিচের বিপক্ষে সিনারের এই জয় শুধু ফাইনালে ওঠার লড়াই ছিলো না বরং ফেঞ্চ ওপেনের ফাইনালের পুনরাবৃত্তি করতে যাচ্ছেন। নিশ্চিত করেই এটি হতে যাচ্ছে রোলাঁ গ্যারো রূপকথার রি-ম্যাচ। চলতি বছরের রোলা গ্যারোর ফাইনালে ইয়ানিক সিনারের কাছে প্রথম দুই সেট হেরেও পরের তিন সেট জিতে দ্বিতীয়বারের মতো ফ্রেঞ্চ ওপেন জিতে নেন স্প্যানিয়ার্ড কার্লোস আলকারাজ।

আলকারাজ নিজেও আছেন ফর্মের তুঙ্গে। উইম্বলডনের আগের দুই আসরেই শিরোপা জিতেছেন। উভয় ফাইনালেই তিনি হারিয়েছেন নোভাক জোকোভিচকে। ইয়ানিক সিনারও পিছিয়ে নেই, আলকারাজের ছয় গ্রান্ড স্ল্যামের বিপরীতে তার মেজর ট্রফির সংখ্যাও তিনটি।
এবারের উইম্বলডনের ফাইনালে উঠতে পারলে ক্যারিয়ারে ২৫তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের সুযোগ তৈরি হতো জোকোভিচের সামনে। কিন্তু সেই স্বপ্ন থামলো সেমিফাইনালেই। এদিন নির্মমভাবে থেমে গেল এক এমন খেলোয়াড়ের কাছে, যিনি যেন জোকোভিচেরই তরুণ সংস্করণ। বয়স ৩৮ ছুঁইছুঁই সার্ব তারকা ম্যাচ শেষে অকপটে মেনে নেন, “শরীর আর আগের মতো সাড়া দিচ্ছে না। আধা ট্যাঙ্ক ফুয়েল নিয়েই খেলতে নেমছি। এইভাবে ম্যাচ জেতা সম্ভব না। এটা দুর্ভাগ্য নয়, এটা বয়সেরই ব্যাপার।”
তিন সেটেই ছন্দ হারিয়ে ছিলেন জোকোভিচ। ম্যাচের মাঝপথে চোট নিয়ে নিয়েছিলেন মেডিকেল টাইমআউট। এমনকি এক পর্যায়ে ম্যাচ থেকে সরে যাওয়ার কথাও ভেবেছিলেন বলে জানিয়েছেন। তবে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে গেছেন।
এই জয়ে সিনার পৌঁছালেন ক্যারিয়ারের পঞ্চম গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে। যদিও এই প্রথমবারের মতো ঘাসের কোর্টে জোকোভিচকে হারালেন তিনি। আগের ছয়টি দেখায় জোকোভিচকে হারালেও, উইম্বলডনে এবারই প্রথম।
এর আগে দিনের প্রথম সেমিফাইনালে প্রচন্ড গরমের মধ্যেও ৫ম বাছাই আমেরিকান প্রতিযোগী টেলর ফ্রিটজকে ৬-৪, ৫-৭, ৬-৩, ৭-৬ (৮-৬) ব্যবধানে হারিয়ে টানা তৃতীয় উইম্বলডন ফাইনালে উঠেছেন কার্লোস আলকারাজ। এই জয়ে উইম্বলডনে তাঁর টানা জয়ের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াল ২৪-এ।
ম্যাচের শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে ছিলেন স্প্যানিশ তরুণ। প্রথম সেটে দ্রুত ব্রেক করে নিয়ন্ত্রণ নেন তিনি। দ্বিতীয় সেটে কিছুটা ছন্দ হারালেও, তৃতীয় ও চতুর্থ সেটে আবারও ঘুরে দাঁড়ান। শেষ সেটে দুই সেট পয়েন্ট বাঁচিয়ে দুর্দান্তভাবে ম্যাচটি শেষ করেন আলকারাজ।
গত ছয়টি গ্র্যান্ড স্ল্যামে অন্তত একজন ছিলেন সিনার বা আলকারাজ। আবারও মুখোমুখি তারা। এইবার ঘাসের মঞ্চে। রোলাঁ গারোর নাটকীয় পাঁচ সেটের লড়াইয়ের প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ এবার সিনারের সামনে। অন্যদিকে আলকারাজ চাইবেন আরও একটি ট্রফি দিয়ে নিজের আধিপত্য ধরে রাখতে।
রবিবার অল ইংল্যান্ড ক্লাবের সেন্টার কোর্টে বিশ্বের চোখ থাকবে এই দুই তরুণের দিকে। একটি যুগের শেষ এবং নতুন যুগের শুরু হতে চলেছে। যার প্রতীক হয়ে উঠেছেন সিনার ও আলকারাজ।
স্কোর কার্ড
বিশ্বকাপ ২০২৩


















