এই একটা দিনের জন্যই যেন সারা বছরের অপেক্ষা। পরিবার, পরিজন, বন্ধু ও স্বজনদের নিয়ে আনন্দে মাতোয়ারা হতে তীব্র আকাঙ্খা নিয়ে তাদের উৎসবের আয়োজন। শুধু কি তাই? তারকা খেলোয়াড়দের একেকটা উৎসবের ছবির জন্য যেন চাতক পাখির মতো তাকিয়ে থাকে কোটি কোটি ভক্তের চোখ।
লিওনেল মেসির জন্য এবারের বড়দিনটাও কাটবে বর্ণিলভাবে। গতবার ক্রিসমাসের কয়দিন আগেই বিশ্বকাপ হাতে নিয়েছিলেন মেসি। তাই গত বছরের ক্রিসমাস উৎযাপন ছিল বাড়তি মাত্রার আনন্দের। এবারও তার হাতে উঠেছে ব্যালন ডি অরের খেতাব। তাঁর স্ত্রী আন্তোনেলা রোকুজ্জোও সেলিব্রেশনে বুদ হয়ে ছিলেন। তাদের ছবি দেখেই বোঝা যায় এইদিনটা ঘিরে থাকে তাদের নানা আয়োজন।
ফুটবল ভক্ত বিশেষ করে আর্জেন্টাইন ভক্তদের কাছে আরও একটা বড় নাম ডি মারিয়া। যাকে ছাড়া আসেনি সাম্প্রতিক আর্জেন্টিনার কোন সাফল্যই। সেই মারিয়া কিন্তু পরিবার ছাড়া যেন কিছুই বোঝেন না। ৷ ফুটবলের বাইরের জগত বলতে তাঁর স্ত্রী ও দুই কন্যা। গতবছর ডি মারিয়ার বাড়ির ক্রিসমাস সাজসজ্জায় ঠাঁই পেয়েছিলো বিশ্বকাপের মস্ত বড় এক রেপ্লিকা।
আর্জেন্টিনার গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজকে নিয়ে ২০২২ বিশ্বকাপ ফাইনাল থেকে এখনও পর্যন্ত সমালোচনার ঝড় বয়ে চলেছে। সেসবে খুব একটা পাত্তা দেননি তিনি; বরং পরিবার ও বন্ধু বান্ধবদের নিয়ে উৎসব চুটিয়ে উপভোগ করেছেন।
ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর জন্য গতবারের বড়দিনটা ভালো কাটেনি। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মেসি যেখানে বিশ্বজয়ের হাসিতে মেতেছিলেন সেখানে ব্যর্থতা নিয়ে দেশে ফিরেছিলেন সিআরসেভেন। তাই বড়দিনে রোনালদোর মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করেছিলেন তার সঙ্গিনী, জর্জিনা রদ্রিগেজ। একটি বিলাসবহুল গাড়ি উপহার দিয়েছিলেন পর্তুগিজ তারকাকে।
রোনালদোর সঙ্গিনী জর্জিনারও নিজস্ব পরিচয় আছে, জর্জিনা একজন ফিটনেস মডেল, সেইসাথে ফ্যাশন ইনফ্লুয়েন্সার। তাই রোনালদোকে দামী উপহার সামগ্রী দেওয়ার সামর্থ্য তার আছে। সঙ্গীর মুখে হাসি দেখতে জর্জিনা রোনালদোকে বড়দিনের উপহার হিসেবে কিনে দিয়েছিলেন বিলাসবহুল রোলস রয়েস গাড়ি। যার মূল্য বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৫ কোটি।
উপহার পেয়ে আবেগতাড়িত হয়ে যান ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে এক ভিডিওতে দেখা গিয়েছিল, জর্জিনার দেওয়া উপহারে বিস্মিত রোনালদোকে। তার কোলে ছিল রোনালদো-জর্জিনা জুটির মেয়ে। উপহারের ছবি নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দিয়ে রোনালদো লিখেছিলেন, ‘ধন্যবাদ, আমার প্রিয়তমা।’
আবার মাঝে মাঝে এসব আয়োজন নিয়ে বিড়ম্বনাও কম হয় না, গত বছর যেমনটি পরতে হয়েছে লিভারপুলের মিশরীয় স্ট্রাইকার মোহাম্মদ সালাহকে।
বড়দিনের উদযাপনের ছবি এবং বার্তা শেয়ার করে ভক্তদের ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন তিনি। অথচ যেখানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বড়দিন উদযাপন নিয়ে পোস্ট করেন না এমন ফুটবল তারকা খুঁজে পাওয়া দায় সেখানে সালাহ কে পড়তে হয়েছিল ভক্তদের কটু শব্দের মুখে।
মোহাম্মদ সালাহ নিজে মুসলিম ধর্মাবলম্বী এবং সহধর্মিণী ম্যাগি খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। গতবছর বড়দিন উৎযাপনের সময় স্ত্রী, দুই সন্তান মাক্কা ও কায়ানের সঙ্গে বড়দিন উপলক্ষে ইনস্টাগ্রাম ও টুইটারে শুভেচ্ছা বার্তা দিয়েছিলেন সালাহ। নিজের হাস্যজ্জ্বল ছবি পোস্ট করেছিলেন লিভারপুলের এই খেলোয়াড়।
বিশ্বজুড়ে লুইস সুয়ারেজের ভক্তের সংখ্যাও কম নয়। মেসির সাথে বন্ধুত্বটাও ভক্তদের জন্য বাড়তি আগ্রহের কারণ। বার্সেলোনা ছাড়ার পর তাদের পুনর্মিলনী হতে যাচ্ছে। মেসির বর্তমান ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে যোগ দিয়েছেন সুয়ারেজ। ফলে দুই বন্ধুর উৎসবের ছবিটাও এবার জমবে ভালো।
ক্রিকেটাঙ্গনে অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক প্যাট কামিন্সতো আছেন সুখের সপ্তমাকাশে। ক্রিকেট দুনিয়ায় কামিন্স এখন দামী একটা ব্রান্ড। এইতো কদিন আগে ঝড় তুলেছিলেন আইপিএল নিলাম। ফলে তার উৎসবটায়ও ভক্তদের চোখ থাকবে।