নারী কাবাডি বিশ্বকাপ – বাংলাদেশের স্বপ্ন ভাঙার গল্প

অধিনায়ক রুপালীর অবসর

নারী কাবাডি বিশ্বকাপ

বাংলাদেশ-চাইনিজ তাইপে ম্যাচের একটি উত্তেজনাপূর্ণ মুহুর্ত

নারী কাবাডি বিশ্বকাপ – স্বপ্নভঙ্গের রাতে বাংলাদেশ

প্রথমবার নিজেদের দেশে এতো বড় একটি টুর্নামেন্ট, নারী কাবাডি বিশ্বকাপ এর দ্বিতীয় আসর বসেছে বাংলাদেশে। তাই স্বাগতিক বাংলাদেশ নারী কাবাডি দলের আশা ছিল চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে যাওয়ার। তবে সেমিফাইনালে চাইনিজ তাইপের কাছে হেরে বাংলাদেশের মেয়েদের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে।

দারুণ উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে ২৫-১৮ পয়েন্টে আজ হেরেছেন রুপালী আক্তাররা। যদিও বাংলাদেশ এবার ব্রোঞ্জ পদক লাভ করেছে, কিন্তু ম্যাচের আগেই অধিনায়ক রুপালী তার অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ম্যাচের আগে তার মাথায় বিদায়ী মুকুটও পড়িয়ে দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।  অপর সেমিতে ভারত ৩৩-২১ পয়েন্টে ইরানকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে।

২০১২ সালে প্রথম নারী কাবাডি বিশ্বকাপ ভারতের পাটনায় অনুষ্ঠিত হয়। সেবার কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়া বাংলাদেশ পঞ্চম হয়। সেই বিশ্বকাপও খেলেছেন রুপালী। ৩৪ বছর বয়সী এই তারকা ২০০৯ সাল থেকে পেশাদার কাবাডি খেলোয়াড়। সে বছর জুনিয়ার এশিয়ান কাপ কাবাডি দিয়ে শুরুর পর দক্ষিণ এশিয়ান গেমস ২০১০, ২০১৬ ও ২০১৯ সালে খেলেন। আর এশিয়ান গেমস কাবাডিতে খেলেন ২০১০, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে।

দীর্ঘ ১৬ বছরের ক্যারিয়ারের অবশেষে ইতি টেনেছেন তিনি। ৩৪ বছর বয়সী রুপালীকে সেমিফাইনাল শুরুর আগে আনুষ্ঠানিক বিদায় দেওয়া হয়। ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ তাকে মুকুট পড়িয়ে দেন এবং বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এসএম নেওয়াজ সোহাগ বিশেষভাবে তৈরি করা উত্তরীয় (শ্যাশে) পড়িয়ে দিয়েছেন।

রুপালী আক্তারের আনুষ্ঠানিক অবসর

সেমিতে চাইনিজ তাইপের সঙ্গে তীব্র লড়াই করেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। যদিও প্রথমার্ধে কিছু ভুলের কারণে তাইপের মেয়েরা ৯-৮ পয়েন্টে এগিয়ে থাকে। বিরতির বাঁশি বাজার কয়েক মুহুর্ত আগে দারুণ এক ট্যাকলে ২ পয়েন্ট নিয়ে ব্যবধান কমিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। আর দ্বিতীয়ার্ধে দারুণ শুরু হয়েছে তাদের। ১০-৯ পয়েন্টে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু সেই ব্যবধান ধরে রাখতে পারেনি তারা।

বাংলাদেশের ব্রোঞ্জ

দ্বিতীয়ার্ধের পঞ্চম মিনিটে বাংলাদেশকে অলআউট করে ১৫-১২ পয়েন্টে লিড পেয়ে যায় চাইনিজ তাইপে নারী কাবাডি দল। এরপর থেকেই আধিপত্য করে গেছে তাইপের মেয়েরা। শেষ পর্যন্ত ২৫-১৮ পয়েন্টে জিতে ফাইনালে ওঠে তারা। সেমিতে ওঠার মাধ্যমে আগেই বাংলাদেশের ব্রোঞ্জ নিশ্চিত হয়ে যায়। কাবাডি বিশ্বকাপে নিজেদের সেরা সাফল্য এটাই। ২০১২ সালের প্রথম বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল চাইনিজ তাইপে। কিন্তু এবার দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়ে পুল ‘বি’ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।

এবার আগামীকোলের ফাইনালে হট ফেভারিট ও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারতের মুখোমুখি হবে চাইনিজ তাইপে। ২০১২ বিশ্বকাপে ইরানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। এবার সেই ইরানের নারী কাবাডি দলকে তারা সেমিতে ৩৩-২১ পয়েন্টে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে।  

Exit mobile version