আগামীকাল শুরু হচ্ছে নারী কাবাডি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় আসর। মিরপুর সোহরাওয়ার্দী জাতীয় ইনডোর স্টেডিয়ামে এই কাবাডি বিশ্বকাপের উদ্বোধন করবেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। এর আগে আজ (রবিবার) প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় হয়েছে আসরের ট্রফি উন্মোচন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ট্রফি উন্মোচন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, ইন্টারন্যাশনাল কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতি বিনোদ কুমার তিওয়ারি, বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতি বাহারুল আলম বিপিএম, সাধারণ সম্পাদক এস এম নেওয়াজ সোহাগ এবং অংশগ্রহণকারী দলের অধিনায়করা।
এবার দ্বিতীয় নারী কাবাডি বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছে ১১টি দেশ। ১৩ বছর পর হচ্ছে মেয়েদের কাবাডি বিশ্বকাপ। সেই আয়োজন বাংলাদেশ করার সুযোগ পেয়ে যথাসম্ভব স্মরণীয় করে তুলতে কাবাডি ফেডারেশন প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবনে হয়েছে ট্রফি উন্মোচন। পাটনায় আয়োজিত ২০১২ সালের প্রথম নারী কাবাডি বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত এবং রানার্সআপ হয় ইরান। দু’টি দলই এবার অংশ নিচ্ছে এবং ট্রফি উন্মোচনে উপস্থিত ছিলেন দুই দলের অধিনায়ক। স্বাগতিক বাংলাদেশসহ বাকি দলের অধিনায়করাও উপস্থিত ছিলেন।

ট্রফি উন্মোচনের আয়োজনে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস অংশগ্রহণকারী দলের অধিনায়কদের সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন। এরপর হয়েছে আনুষ্ঠানিক ফটোসেশন। অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষিত ‘তারুণ্যের উৎসব’উদযাপনের অংশ হিসেবে নারী কাবাডি বিশ্বকাপ আয়োজন করা হচ্ছে। ২০১২ সালের প্রথম বিশ্বকাপ আসরে ১৬ দেশ অংশ নিয়েছিল। এবারও ১৪ দলের অংশ নেওয়া কথা থাকলেও আসেনি আর্জেন্টিনা, জাপান, কোরিয়া ও নেদারল্যান্ডস। এই ৪ দলের পরিবর্তে বিকল্প হিসেবে শুধু পোল্যান্ডকেই পাওয়া গেছে।
আগের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ‘সি’গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে অপরাজিত থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল। কিন্তু জাপানের কাছে ১৫-১৭ পয়েন্টে হেরে বিদায় নিতে হয়। পঞ্চম স্থান অর্জন করে বাংলাদেশ নারী কাবাডি দল। কিন্তু এবার নিজেদের দেশে বিশ্বকাপ। তাছাড়া গত মার্চে ইরানে অনুষ্ঠিত এশিয়ান নারী কাবাডি চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ জয়ের মাধ্যমে এখন আত্মবিশ্বাসও বেড়েছে দলের।
বেশ লম্বা সময় ধরেই বিকেএসপিতে অনুশীলন করছে বাংলাদেশের মেয়েরা। মূলত বিশ্বকাপ সামনে রেখেই জোর অনুশীলন হয়েছে। এবার মূল মঞ্চে লড়াই করার পালা। কোচিং স্টাফরা জানিয়েছেন, আগের তুলনায় বাংলাদেশ দল এখন ফিটনেস, কৌশলগত দিক এবং দলীয় সমন্বয়ে অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে, যা লাল-সবুজের প্রধান শক্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বাংলাদেশের প্রধান কোচ আরদুজ্জামান মুন্সি এবং অধিনায়ক রূপালী আক্তার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন যে তারা প্রথম বিশ্বকাপের পারফর্ম্যান্স ছাড়িয়ে যেতে প্রস্তুত। আগামীকাল মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে ম্যাচগুলো শুরু হবে। যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আসরের উদ্বোধন করবেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ইন্টারন্যাশনাল কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতি বিনোদ কুমার তিওয়ারি এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব-উল-আলম।
এবারের আসরে দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে খেলবে দলগুলো। ‘এ’ গ্রুপে বাংলাদেশ লড়বে ভারত, থাইল্যান্ড, উগান্ডা এবং জার্মানির বিপক্ষে। অন্যদিকে ৬ দেশ নিয়ে সাজানো ‘বি’গ্রুপে আছে ইরান, নেপাল, চাইনিজ তাইপে, পোল্যান্ড, কেনিয়া এবং জাঞ্জিবার।
বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন ঢাকায় স্মরণীয় ও ঐতিহাসিক আয়োজনের মাধ্যমে নতুন মাইলফলক স্পর্শ করতে চায়। আসরের আগে বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এস এম নওয়াজ সোহাগ বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন দপ্তর এ আয়োজন সফল করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। আমরা নিশ্চিত যে তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা দ্বিতীয় নারী কাবাডি বিশ্বকাপের নির্বিঘ্ন আয়োজন নিশ্চিত করবে। বিশ্বকাপের মতো মর্যাদাপূর্ণ আয়োজন পৃষ্ঠপোষকদের উদার সহায়তা ছাড়া সম্ভব হত না। বাংলাদেশ জাতীয় নারী কাবাডি দলের সদস্যরা বিশ্বমঞ্চে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য প্রস্তুত।’
স্কোর কার্ড
বিশ্বকাপ ২০২৩

















