নারী বিশ্বকাপে যাদের ব্যাটে আলো ঝড়বে!

বাংলাদেশ দলের অন্যতম ব্যাটিং ভরসা শারমিন আক্তার।


৩০ সেপ্টেম্বর শুরু হয়েছে আইসিসি নারী বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ১৩তম আসর। প্রতিটা টুর্নামেন্টেই দর্শকদের দৃষ্টি থাকে আলোচিত বোলার ও ব্যাটারের ওপর। এবারের আসরে প্রতিটি দল থেকে একজন ব্যাটারকে বেছে নিয়েছে আইসিসি যারা ব্যাট হাতে দর্শকদের নজর কাড়তে পারেন।

অস্ট্রেলিয়া – বেথ মুনি

২০২৫ সালে মুনি দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন। এই বছর তিনি প্রতিটি ওয়ানডেতে দুই অঙ্কের রান করেছেন, ভারত এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অসাধারণ পারফরমেন্স দেখিয়েছেন। এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার হোবার্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অর্ধশতক হাঁকানোর পর চণ্ডীগড়ে ভারতের বিপক্ষে যৌথভাবে দ্বিতীয় দ্রুততম মহিলা ওয়ানডে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। চাপের মুখে তার শান্ত থাকা বড় ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

বাংলাদেশ – শারমিন আক্তার সুপ্ত

শারমিন এই বছর বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের প্রতিটি ম্যাচেই তার দক্ষতা দেখিয়েছেন। আটটি ওয়ানডেতে মাত্র একবার ২০-এর কম রান করেছেন। এপ্রিলে ক্যারিয়ারে প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরির খুব কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন শারমিন। থাইল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ের দিন অপরাজিত ৯৪ রান করেন তিনি। গত বছরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ওয়ানডে রান সংগ্রাহক ছিলেন। ২৯ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপে খেলতে যাচ্ছেন। তার ব্যাটিংয়ের দিকেই তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ দল।

ইংল্যান্ড – ন্যাট সাইভার-ব্রান্ট

পুরো ইংল্যান্ড দলই আছে দারু ফর্মে। দির্ঘদিন ধরেই বিশ্ব নারী ক্রিকেটে দাপুটে উপস্থিতি ইংলিশ মেয়েদের। দলের অন্যতম ব্যাটিং আস্থার নাম অধিনায়ক সাইভার-ব্রান্ট। আইসিসি নারী ওয়ানডে ব্যাটিং র‍্যাঙ্কিংয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছেন এই ব্যাটার। উইকেট সামলানোর পাশাপাশি ব্যাট হাতে ক্রিজে তার উপস্থিতি ইংল্যান্ডের জন্য স্বস্তির নাম। প্রায়ই তিনি দলকে বিপদে গড়লে উদ্ধারকারী হিসেবে উপস্থিত হন। এই বছর ওয়ানডেতে চারটি অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন।

ভারত – স্মৃতি মান্ধানা

ক্রিকেটের লম্বা ফর্মেটে (ওয়ানডে ও টেস্ট) তার ধারাবাহিক ব্যাটিং দর্শকদের জন্য যেন চোখের শান্তি। এই মুহুর্তে আছেন আইসিসি নারী ওয়ানডে ব্যাটিং র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে। ২৯ বছর বয়সী ভারতীয় সহ-অধিনায়ক শুধুমাত্র ২০২৫ সালে ওয়ানডেতে তিনটি করে সেঞ্চুরি এবং হাফসেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। এই বছর ১৩ ইনিংসে গড়ে ৬২ রান করেছেন। এই স্কোরগুলি কিছু শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধেও এসেছে। সেপ্টেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলে ১১৭ রান করেছিলেন।

নিউজিল্যান্ড – জর্জিয়া প্লিমার

ওপেনার জর্জিয়া প্লিমার বছরের শুরুতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে নিউজিল্যান্ডের ওয়ানডে সিরিজ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তার ১১২ রানের ইনিংসটি ছিলো ম্যাচজয়ী। পরে নিউজিল্যান্ড এ দলের হয়ে ইংল্যান্ড এ দলের বিরুদ্ধে আরও একটি সেঞ্চুরি করেন। গত বছরে, তিনি নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক এবং ভারতের মাটিতে এবারের বিশ্বকাপেও নিজের ব্যাটিং দক্ষতা দেখার জন্য মুখিয়ে আছেন প্লিমার।

পাকিস্তান – সিদরা আমিন

দুর্দান্ত ফর্ম নিয়ে এবারের বিশ্বকাপ খেলতে এসেছেন সিদরা। এই বছর সাত ওয়ানডে ম্যাচের সবগুলোতেই তিনি দলের জন্য নির্ভরতার প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, সেপ্টেম্বরে ৩৩ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রায় একাই নাস্তানাবুদ করেছিলেন। তিনি অপরাজিত ১২১ এবং পরপর দুটি ম্যাচে ১২২ রান করে করেছিলেন। এই বছর তার অর্ধেকেরও বেশি ওয়ানডেতে, তিনি পাকিস্তানের হয়ে সর্বাধিক রান করেছেন। ফলে তার ব্যাটেই তাকিয়ে থাকবে পাকিস্তান।

দক্ষিণ আফ্রিকা – মারিজান ক্যাপ

অবসর ভেঙে ফিরে আসার পর ৩৬ বছর বয়সী মারিজান ক্যাপ নিখুঁত সময়ে ফর্মে আছেন বলে মনে করা হচ্ছে। সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিনি ১২১ রান করে দলকে জিতিয়েছিলেন। এর আগে অবসর ভেঙে ফিরে আসার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩০ এরও বেশি রান করে বুঝিয়েছিলেন তাকে ফেরানোটা দলের জন্যই প্রয়োজন ছিলো। ২০০৯ সালে ওয়ানডে অভিষেক হওয়ার পর থেকেই দলকে নিয়মিত সার্ভিস দিয়ে গেছেন।

শ্রীলঙ্কা – হর্ষিভা সামারাবিক্রমা

গত বছর, সামারাবিক্রমা শ্রীলঙ্কার হয়ে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন। ২০২৫ সালের শুরু থেকে, তিনি চারটি অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন, যার মধ্যে তার সর্বোচ্চ রান বিশ্বকাপের প্রতিদ্বন্দ্বী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে, যেখানে তিনি সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ৭৭ রানের রেকর্ড করেছেন যা শ্রীলঙ্কাকে জয় এনে দিতে সাহায্য করেছে। ২৭ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার নিঃসন্দেহে শ্রীলঙ্কার অন্যতম ব্যাটিং স্তম্ভ।

Exit mobile version