সময়টা এখন নারী ক্রিকেটার স্বর্ণার

দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দল। সিরিজের প্রথম টি-২০ ম্যাচে শক্তিশালী হোমটিমের বিরুদ্ধে রুদ্ধশ্বাস জয় তুলে নিলো বাংলার মেয়েরা। এদিন নিজের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং পারফর্ম্যান্সে ম্যাচ সেরা হয়েছেন জামালপুরের মেয়ে স্বর্ণা আক্তার।

১১ বছর পর টি-টোয়েন্টিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকাকে তাঁদের নিজেদের মাটিতেই হারিয়ে বিজয়ের পতাকা উড়িয়েছে টাইগ্রেসরা। রোমাঞ্চ ছড়ানো সেই ম্যাচে ইতিহাসের পাতায় বাংলাদেশের নাম লেখান লেগ স্পিনার স্বর্ণা আক্তার। বোলিংয়ে ২৮ রান দিয়ে পেয়েছেন পাঁচ উইকেট। বাংলাদেশের চতুর্থ নারী বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে ফাইফারের স্বাদ নিয়েছেন এই লেগি। জাহানারা আলম, পান্না ঘোষ ও নাহিদার পর চতুর্থ বাংলাদেশি বোলার হিসেবে মেয়েদের টি-টোয়েন্টিতে পাঁচ উইকেট পেলেন তিনি। আর তাতেই আসে বাংলাদেশের স্মরণীয় জয়।

জয়ের জন্য ১৫০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতেই ৬৭ রান তুলে ফেলে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকান মেয়েরা। এতোটুকু দেখেই যে কেউ ধারণা করে নিতে বাধ্য যে ম্যাচটা হেসে খেলেই জিতে যাবে প্রোটিয়ানরা। তবে সৃষ্টিকর্তা বেনোনির উইলোমুর পার্কে পরের অংশটা লিখে রেখেছিলেন বাংলাদেশের জন্যই। বিশেষ করে বলতে চাইলে, বাংলাদেশি লেগ স্পিনার স্বর্ণা আক্তারের জন্য। এই লেগির মায়াবি ঘূর্ণিজাদুতে পড়ে খেই হারিয়ে ছন্দপতন হয় প্রোটিয়ানদের। তাতেই তাঁদের ইনিংস আট উইকেট হারিয়ে ১৩৬ রানেই আটকে যায়।

ভয়ংকর হয়ে ওঠা স্বাগতিক মেয়েদের নিজের বিদ্ধংসী বোলিংয়ে আটকে দেন জামাল্পুরের মেয়ে স্বর্ণা আক্তার। তিনি যেভাবে স্নায়ু স্থির রেখে বোলিং করেছেন তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। তাঁর বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার দূর্গ ভাঙতে সক্ষম হয় লাল-সবুজের নারী প্রতিনিধিরা।

চলতি বছরের শুরুতে প্রথমবার আয়োজিত নারী অনুর্ধ-১৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে সুপার ফোর নিশ্চিত করেছে নারী ক্রিকেট দল। সেই বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে যারা এগিয়ে নিয়ে গেছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম একজন স্বর্না। সেই দলের সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।

চলতি বছরেই জাতীয় দলে অভিষেক হয়েছিলো এই অলরাউন্ডারের। অনুর্ধ-১৯ বিশ্বকাপে আলো ছড়িয়ে বাংলাদেশের জাতীয় দলে সুযোগ করে নেয়া স্বর্ণা আক্তারের অভিষেক হয় ভারতের বিপক্ষে। তাঁদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে অভিষেক ক্যাপ মাথায় পরেন স্বর্ণা।

জামাল্পুর পৌর শহরের কাচারীপাড়া মুসলিমাবাদ এলাকার বাসিন্দা স্বর্ণা আক্তার। বাবা-মায়ের চার সন্তানের মধ্যে সর্ব কনিষ্ঠ তিনি। তাঁর বাবা পেশায় একজন নরসুন্দর, মা গৃহিণী।

Exit mobile version