রোমাঞ্চ আর উত্তেজনা ফাইনালে শেষ ওভারে চিটাগং কিংসকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় বার বিপিএলে চ্যাম্পিয়ন হলো ফরচুন বরিশাল। মিরপুরে চিটাগং কিংসকে ৩ উইকেটে হারিয়ে বিপিএলে আড়াই কোটি টাকার বিপিএল শিরোপা জিতলো তামিম ইকবালের দল। ১৯.৩ ওভারে ৭ উইকেটে ১৯৫ রান পূর্ণ করে ফরচুন বরিশাল।
এর আগে, মিরপুরে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৯৪ রান করে চিটাগং কিংস। ১৬ ওভারেই ১৬৩ রান তুলে ফেলা দলটির শেষ ২৪ বল রান এসেছে মাত্র ৩১। কিংসের বড় পুঁজিতে এদিন দারুণ ব্যাটিং করেন ওপেনার ইমন। ওপেনিংয়ে নেমে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৭৮ রানে।
তার ৪৯ বলের ইনিংসে ছিলো ৬টি চার ও ৪টি ছক্কার মার। আরেক ওপেনার খাজা নাফাই ৪৪ বলে ৭টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৬৬ রান করেন। এছাড়া ২৩ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪৪ রানের ঝড়ো ইনিংস উপহার দেন ক্লার্ক।
অবশ্য শিরোপার লড়াইয়ে শুরুতে দুই ওপেনারই সাবধানী ব্যাটিং করেন। যদিও নাফাই প্রথম দুই ওভারে একটি করে বাউন্ডারি মারেন। আর তৃতীয় ওভারে ইমন মারেন জোড়া বাউন্ডারি। আর তাতেই দারুণ ছন্দ তাতেই খুঁজে পান এই ওপেনার। তানভির ইসলামের করা পরের ওভারে একটি চার ও দুটি ছক্কা হাঁকিয়ে আগ্রাসনের শুরু করেন তিনি। তাতে ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে ৫৭ রান পায় কিংসরা।
পাওয়ার প্লে শেষেও ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন কিংসের দুই ওপেনার। নিয়মিত বাউন্ডারি মেরে ১১ ওভারে দলীয় শতক পূরণ করেন তারা। নিজের টি-টয়েন্টি ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটি তুলে নেন ইমন। তার ফিফটি পূরণ হওয়ার পর রিশাদ হোসেনের পরের ওভারের প্রথম দুই বলেই মারেন দুটি ছক্কা মারেন খাওজা।
কিন্তু এরপর ইবাদত হোসেনের করা বল মারতে গেলে ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের ক্যাচে পরিণত হন খাওজা। বরিশালের প্রথম সাফল্য পাওয়ায় ভাঙে ১২১ রানের জুটি। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে ঝড় তোলেন ক্লার্ক। ওপেনার ইমনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ৪০ বলে গড়েন ৭০ রানের জুটি।
তানভিরের করা ইনিংসের ১৬তম ওভারে ক্লার্ক ও ইমন মিলিয়ে তিনটি ছক্কা মারেন। তবে শেষ চার ওভারে রানের গতিতে লাগাম ধরে বরিশাল। তাতে দুইশ ছুঁতে পারেনি পুঁজি। বল হাতে এবাদত ও মোহাম্মদ আলী একটি করে উইকেট নেন।
জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে ওপেনিংয়ে ঝড় তোলেন বরিশালের দুই ওপেনার। অভিজ্ঞ তামিম ইকবাল ও তাওহিদ হৃদয় ৮.১ ওভারে ৭৮ রান তোলেন। এরপর বরিশাল শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন শরিফুল ইসলাম। ইনিংসের নবম ওভারে তামিম ও মালানকে ফিরিয়ে দেন। তামিম ২৯ বলে নয় বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় ৫৪ রান ও মালান ২ বলে এক রান করেন। এবার জোড়া আঘাত হানেন মোহাম্মদ নাঈম।
ইনিংসের ১১তম ওভারে নাইমের বলে দলীয় ৯৬ রানের মাথায় তাওহিদ হৃদয় ৩২ ও দলীয় ১৩০ রানের মুশফিক ১৬ রান করে ফেরেন। এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে বরিশালের হাল ধরেন কাইল মায়ার্স। তবে ইনিংসের ১৮তম ওভারে বরিশালের সেট এই দুই ব্যাটারকে ফিরিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন শরিফুল ইসলাম।
ওভারের তৃতীয় বলে মায়ার্স ব্যক্তিগত ৪৬ রান করে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। তার ২৮ বলের ইনিংসে তিনটি করে চার ও ছক্কা রয়েছে। ঐ ওভারের পঞ্চম বলে অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ ১১ বলে ৭ রান করে উইকেটের পেছনে মিঠুনের হাতে ক্যাচ দেন। তাতে ৪ ওভারে ৩৪ রানে চার উইকেট পূর্ণ করেন শরিফুল।
জিততে শেষ ১২ বলে বরিশালের প্রয়োজন ২০ রান। উইকেটে তখন আফগান অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবি ও রিশাদ হোসেন।
বিনুরা ফার্নান্দোর করা ১৯তম ওভারে ছক্কা হাকিয়ে বরিশাল শিবিরে উল্লাস ফিরিয়ে আনেন রিশাদ। কিন্তু ওভারের শেষ বলে নবী ৪ রান করে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। শেষ ওভারে জিততে দরকার তখন ৮ রান। ক্রিজে তখন রিশাদ ও তানভির ইসলাম। শেষ ওভারে বিশাল এক ছক্কার মধ্য দিয়ে ম্যাচ জিতিয়ে নায়ক রিশাদ। তিনি ৬ বলে অপরাজিত ১৮ রান করে বরিশালের জয়ের নায়ক।
স্কোর কার্ড
বিশ্বকাপ ২০২৩


















