চোখে জল নিয়ে মাঠ ছাড়লেন মেসি। আর মেসির কান্নায় ভাঙল ভক্তদের হৃদয়। ফাইনাল গড়াল অতিরিক্ত সময়ে। তবে হাসি-কান্না রোমাঞ্চ আর উন্মাদনার শেষে হাসি, আর্জেন্টিনার। রোমাঞ্চ ছড়িয়ে অতিরিক্তি সময়ে লাউতারো মার্টিনেজের এক মাত্র গোলে কলম্বিয়ার হৃদয় ভেঙে শিরোপা ধরে রাখল আর্জেন্টিনা ।
কলম্বিয়ার বিপক্ষে হাইভোল্টেজ ফাইনালের ৩৫তম মিনিটে চোট পাওয়ার পর প্রথমার্ধের বাকি সময়ে কোনোমতে মাঠে টিকে ছিলেন লিওনেল মেসি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আর পারলেন না আর্জেন্টিনা অধিনায়ক। চোখে জল নিয়ে মাঠ ছাড়লেন তিনি। অবশ্য এদিন ফ্লোরিডার হার্ড রক স্টেডিয়ামে টিকেটবিহীন দর্শকদের উপদ্রবে দুই দফা পিছিয়ে নির্ধারিত সময়ের ৮০ মিনিট পর শুরু হয় খেলা।
ফাইনালে শুরুটা অবশ্য ভালো করেছিল আর্জেন্টিনাই। প্রথম মিনিটে গনসালো মন্টিয়েলের ক্রসে ডি-বক্সের মাঝে বল পেয়ে যান হুলিয়ান আলভারেস। কিন্তু তার ডান পায়ের শট বাম পাশ দিয়ে চলে যায় বাইরে।
এরপর ফাইনালে ১৫ মিনিট ধরে চলে কলম্বিয়ার দাপট। পঞ্চম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে বাম পায়ের শট নেন লুইস দিয়াস। এরপর আরও দুই দফা আর্জেন্টিনার রক্ষণে হানা দেয় কলম্বিয়া। তবে লিসান্দ্রো মার্তিনেস, নিকোলাস তাগলিয়াফিকোদের রক্ষণ ভাঙতে পারেনি তারা।
ফাইনালে ৩৩তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে আচমকা দূরপাল্লার শট নেন লের্মা। ডান দিকে ঝাঁপ দেওয়া এমিলিয়ানোর আঙুল ছুঁয়ে পোস্টে লেগে বল চলে যায় বাইরে। এরপর দুই মিনিট পর ডি-বক্সের মুখে বল পেয়ে কলম্বিয়ার একজনের চ্যালেঞ্জের মুখে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাইলাইনের কাছে পড়ে যান মেসি। চোট পান ডান পায়ে। বেশ কিছুক্ষণ ধরে মাঠেই শুশ্রূষা নিয়ে নিজ পায়ে দাঁড়ান আর্জেন্টিনা অধিনায়ক। বিরতির আগের বাকি সময়টায় তাকে খুড়াতে দেখা যায়।
অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধে আর পারলেন না মেসি। খেললেন না ৬৩ মিনিট পর্যন্ত। প্রেসিং করতে গিয়েই পড়ে যান মাঠে। সেখান থেকে আর ফেরা হয়নি মেসির। মাঠের চিকিৎসার পর আর্মব্যান্ড তুলে দিলেন আনহেল ডি মারিয়ার কাছে। সাইডবেঞ্চে বসেই এরপর কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মেসি।
ম্যাচে অবশ্য মেসিকে এমন কড়া ট্যাকেলের পরেও কোনো কার্ড দেখতে হয়নি আরিয়াসকে। ব্রাজিলিয়ান রেফারি রাফায়েল ক্লাউস বাজাননি ফাউলের বাঁশিও। বদলি নেমে নিকোলাস গঞ্জালেস খেলেছেন দুর্দান্ত। একাধিকবার ভয় ধরিয়ে দিয়েছেন কলম্বিয়ার রক্ষণে। যদিও গোলরক্ষক ক্যামিলো ভারগাসের কাছে আটকাতে হয়েছে তাদের। আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা এসেছিলেন বদলি হিসেবে। সেই লাউতারো মার্টিনেজই ফাইনালে এনে দিলেন লিড।
দুর্দান্ত এক শটে ভাঙলেন ডেডলক। ম্যাচের ১১১ মিনিটে লিড পেল আর্জেন্টিনা। মাঝমাঠ থেকে থ্রু বল পাঠিয়েছিলেন জিওভানি লো সেলসো। বদলি নামা এই মিডফিল্ডারের পাস খুঁজে নেয় লাউতারো মার্টিনেজকে। সেখান থেকে ঠাণ্ডা মাথার ফিনিশে বল জালে পাঠান লাউতারো মার্টিনেজ।
সেই সঙ্গে নিজেদের এক চক্রপূরণ সম্পন্ন করল আর্জেন্টিনা। ২০২১ সালের কোপা আমেরিকা, ২০২২ সালের বিশ্বকাপ আর ২০২৪ সালের কোপা আমেরিকা। টানা তিন আন্তর্জাতিক ট্রফি জয়ের এক বিরল রেকর্ড গড়ল তারা।